সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পরমানুর নিউক্লিয়াস


পরমাণুর নিউক্লিয়াস :: ATOMIC NUCLEUS
@ নিউক্লিয়াস :- 
পরমাণুর কেন্দ্রে অবস্থিত একটি ক্ষূদ্রতম অংশ যার মধ্যে পরমাণুর সমস্ত ধনাত্মক আধান ও ভর অবস্থান করে তাকে পরমাণুর নিউক্লিয়াস বলে।


                     N                                                       N হল পরমাণুর নিউক্লিয়াস।


@ নিউক্লিয়াস  ধনাত্মক আধান যুক্ত কণিকা প্রোটন এবং তড়িৎ নিরপেক্ষ কণিকা নিউট্রন দ্বারা গঠিত।

@ তেজস্ক্রিয়তা কাকে বলে ?
যে ধর্মের জন্য সাধারণত কিছু উচ্চ পারমাণবিক ভর সংখ্যা বিশিষ্ট মৌল সব অবস্থায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে এক বিশেষ ধরনের অদৃশ্য বিকিরণ নিঃসরণ করে এবং নতুন মৌলের পরমাণুতে পরিণত হয় তাকে  তেজস্ক্রিয়তা বা তেজস্ক্রিয় বিঘটন বলে।
ইউরেনিয়াম ও থোরিয়াম ও রেডিয়াম এই ধরনের কতগুলো ভারি মৌলের পরমাণুর নিউক্লিয়াস নিজে থেকেই যেকোনো অবস্থায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে অবিরাম গতিতে বিভাজিত হয়ে নতুন মৌলের নিউক্লিয়াস এ পরিণত হয় এবং সেই সঙ্গে এক বিশেষ ধরনের অদৃশ্য রশ্মি বিকিরণ করে যা অন্ধকারে ফটোগ্রাফিক প্লেট কে আক্রান্ত করে পাতলা ধাতু পাত ভেদ করে গ্যাসের মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় গ্যাসকে আয়নিত করে। এই বিকিরিত রশ্মি গুলি আলো ,চাপ ,উষ্ণতা ,রাসায়নিক বিক্রিয়া প্রভৃতি কোন কারণ দ্বারাই প্রভাবিত হয় না।
@ প্রথম তেজস্ক্রিয়তা আবিষ্কার করেন হেনরি বেকরেল।
@ যেসব পদার্থ তেজস্ক্রিয় রশ্মি বিকিরণ করে তাদের তেজস্ক্রিয় পদার্থ বলে।
@ কতগুলি তেজস্ক্রিয় পদার্থের উদাহরণ হল ইউরেনিয়াম (U),থোরিয়াম (Th) ,রেডিয়াম (Ra), নেপচুনিয়াম (Np), প্লুটোনিয়াম (Pu) , পোলোনিয়াম ( Po) ইত্যাদি।
@ হেনরি বেকরেল এরপর মাদাম কুরি ও পিয়ের কুরি পোলোনিয়াম এবং রেডিয়াম  মৌলের আবিষ্কার করেন।
@ কিছু হালকা মৌল আছে যেমন কার্বন , পটাশিয়াম এদের কিছু কিছু আইসোটোপ তেজস্ক্রিয়। 
@                    - আলফা রশ্মির বৈশিষ্ট্য
 ১) প্রকৃতি:- আলফা রশ্মি ধনাত্মক তড়িতাধান যুক্ত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পদার্থ কণার সমষ্টি।
  ২) আধান :- প্রতিটি আলফা কণার মান +2 একক বা 9.6×10^-10 esu।
  ৩) ভর :- প্রতিটি আলফা কণার ভর 4 একক অর্থাৎ 6.642×10^-27 কিলোগ্রাম।
  ৪) ভেদন ক্ষমতা :- আলফা কণার ভর বেশি এবং বেগ কম তাই এর ভেদন ক্ষমতা সবচেয়ে কম।
  ***** এই রশ্মি 0.1 মিমি অ্যালুমিনিয়াম পাত ভেদ করতে পারে।
  ৫) গ্যাসকে আয়নিত করার  ক্ষমতা:- গ্যাসীয় মাধ্যমে যাওয়ার সময় পদার্থের পরমাণু থেকে ইলেকট্রন বিচ্ছিন্ন করে ফলে গ্যাসকে আয়নিত হয়।
****** গ্যাসকে  আয়নিত করার ক্ষমতা আলফা কনার সবচেয়ে বেশি।

@       - বিটা রশ্মির বৈশিষ্ট্য :-
১) প্রকৃতি :-  বিটা রশ্মি ঋণাত্মক তড়িতাধান যুক্ত উচ্চশক্তি সম্পন্ন ইলেকট্রন কণার স্রোত।
২) আধান :- ঋণাত্মক, ―1 একক বা 4.8×10^-10 esu।
৩) ভর :- প্রতিটি বিটা কণার ভর 9.1×10^-31 কিলোগ্রাম‌ বা 0.000548amu।
৪) ভেদন ক্ষমতা :- ভর  খুবই কম ও গতিবেগ খুব বেশি  তাই ভেদন ক্ষমতা খুব বেশি।
৫) আয়নিত করার ক্ষমতা :- ভর খুব কম হয় সেকারণে গ্যাসকে আয়নিত করার ক্ষমতা কম।

@       -গামা রশ্মির বৈশিষ্ট্য :- 
১)  প্রকৃতি :- গামা রশ্মি কোনো কণা নয়। এটি একটি অতি ক্ষুদ্র তরঙ্গ দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট তড়িৎ চুম্বকীয় তরঙ্গ।
২) আধান :- গামা রশ্মির আধান শূণ্য অর্থাৎ নিস্তড়িৎ।
৩) ভর :- গামা রশ্মির ভর নেই অর্থাৎ ভর শূণ্য।
৪) ভেদন ক্ষমতা :- গামা রশ্মির ভেদন ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি।এটি 8 সেমি অ্যালুমিনিয়াম পাত ভেদ করতে পারে।
৫) আয়নিত করার ক্ষমতা:- আধান নেই বলে গ্যাসকে  আয়নিত করার ক্ষমতা খুবই কম।

@@ তেজস্ক্রিয়তার কারন :- 
১) যে সব মৌলের নিউক্লিয়াসে নিউট্রন এবং প্রোটনের সংখ্যার অনুপাত 1.5 এর চেয়ে বেশি কোন মৌলের নিউক্লিয়াস গুলি অস্থায়ী হয়।এগুলো স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে তেজস্ক্রিয় বিকিরণ করে স্থায়ী হতে চেষ্টা করে। 
২) যে সব মৌলের পারমানবিক সংখ্যা 82 এর বেশী অথবা পারমাণবিক গুরুত্ব 206 এর বেশি সেগুলো তেজস্ক্রিয়তা প্রদর্শন করে।

@@ তেজস্ক্রিয়তার বৈশিষ্ট্য :-
১) তেজস্ক্রিয়তা একটি নিউক্লয় ঘটনা।এর সঙ্গে পরমাণুর নিউক্লিয়াসের বাইরের ইলেকট্রনের কোন সম্পর্ক নেই।
২) বাহ্যিক চাপ ,উষ্ণতা, রাসায়নিক বিক্রিয়া,  তড়িৎ চৌম্বক ক্ষেত্র , রাসায়নিক গঠন ইত্যাদি তেজস্ক্রিয় তাকে প্রভাবিত করতে পারে না।
৩) তেজস্ক্রিয়তা বিকিরণে তিন ধরনের রশ্মি থাকে -- আলফা ,বিটা,গামা।
৪) তেজস্ক্রিয়তা হল একটি নিউক্লিয়াসের ভাঙ্গন বা বিঘটন। এর ফলে একটি মৌল সম্পূর্ন ভিন্ন রাসায়নিক এবং ভৌত ধর্ম বিশিষ্ট নতুন মৌলে পরিণত হয়।
৫) যে সব মৌলের পারমাণবিক গুরুত্ব 206 এর বেশি তারা তেজস্ক্রিয়তা প্রদর্শন করে।

★★★★★
তেজস্ক্রিয় সক্রিয়তা :- 
কোন তেজস্ক্রিয় পদার্থে প্রতি সেকেন্ডে যতগুলো নিউক্লিয়াসের বিঘটন হয় ,তাকে ওই পদার্থের সক্রিয়তা বলে।
সক্রিয়তার একক হল SI  পদ্ধতিতে বেকারেল (Bq)। অপর একটি একক হল কুরি( Ci)।
■■   তেজস্ক্রিয় পদার্থে প্রতি সেকেন্ডে একটি নিউক্লিয়াসের বিঘটন হলে  সক্রিয়তা 1 Bq হয়।
1Ci=3.7×10^10 Bq
■ বিটা রশ্মি হল উচ্চশক্তি সম্পন্ন ইলেকট্রন কনার স্রোত।
■ ইউরেনিয়াম এর পরে সকল মৌল তেজস্ক্রিয়।
■ তেজস্ক্রিয় পদার্থের পরমাণুর নিউক্লিয়াস থেকে আলফা ,বিটা , গামা রশ্মি নির্গত হয় এখানে মূল পরমাণু টিকে বলে  জনক পরমাণু। এবং নতুন মৌলের পরমাণু কে বলে দুহিতা পরমাণু।
°◆◆তেজস্ক্রিয়তার ব্যবহার :- 
ক) চিকিৎসা ক্ষেত্রে :-
১) রেডিয়েশন থেরাপির সাহায্যে লিউকেমিয়া, ক্যান্সার ইত্যাদি চিকিৎসা করা হয়।কোবাল্ট 60 এর বিকিরণ টিউমারের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়।
২) তেজস্ক্রিয় সন্ধানী মৌল যেমন রেডিও-সোডিয়াম ক্লোরাইড ,রেডিও আয়রন ,রেডিও আয়োডিন রোগ নির্নয়ের কাজে লাগে।
★★ লিউকেমিয়া ও মস্তিষ্কের টিউমার এর চিকিৎসা ক্ষেত্রে তেজস্ক্রিয় ফসফরাস (32P) ব‍্যবহার হয়।
★★ থাইরয়েড রোগের চিকিৎসায় তেজস্ক্রিয় আয়োডিন (131I)ব‍্যবহার করা হয়।
খ) বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে:-
১) নিউক্লিয় আলফা কনা প্রোজেক্টাইল রূপে ব্যবহৃত হয়।
২) কৃষিক্ষেত্রে উদ্ভিদের বেড়ে ওঠা এবং উদ্ভিদের ওপর রাসায়নিক সারের প্রভাব তেজস্ক্রিয় সন্ধানী মৌলের সাহায্যে পর্যবেক্ষণ করা হয়।
৩) তেজস্ক্রিয় পদার্থের বিঘটিত অংশ এবং অবশিষ্ট অংশের মধ্যে 6C12 ও  6C14 এর অনুপাত পর্যালোচনা করে কোন বস্তুর প্রাচীনত্ব ,পৃথিবীর বয়স ইত্যাদি নির্ণয় করা হয়। এই পদ্ধতিকে বলে কার্বন ডেটিং।
গ) শিল্পক্ষেত্রে :- 
১) তেজস্ক্রিয় পদার্থ পারমাণবিক চুল্লিতে জ্বালানি রূপে ব্যবহার হয়।
২) আলফা কণার আয়নায়ন ক্ষমতা ,দীপ্তিমান প্রতিক তৈরী , পারমাণবিক ব্যাটারি তৈরী প্রভৃতিতে ব্যবহৃত হয়।
★★ পৃথিবীর যে কোনো স্থানে প্রাপ্ত ইউরেনিয়াম এর আকরিক থেকে সিসার আকরিক 206 Pb 82 পাওয়া যায়।
@ কোন পরমাণুর নিউক্লিয়াস প্রোটন এবং নিউট্রন দ্বারা গঠিত । নিউক্লিয়াসে উপস্থিত প্রোটন ও নিউট্রনের মোট ভর নিউক্লিয়াসের মোট ভরের সমান , প্রোটন এবং নিউট্রন কে একত্রে নিউক্লিয়ন বলে।
@ নিউক্লিয়াসের প্রত্যাশিত গড়= প্রোটন সংখ্যা ×একটি প্রোটনের ভর+ নিউট্রন সংখ্যা ×একটি নিউট্রনের ভর।
◆ ভর বর্ণালিবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে জানা যায় যে নিউক্লিয়াসের প্রকৃত ভর ওর প্রত্যাশিত ভরের চেয়ে কম হয় ভরের এই পার্থক্যকে ভর বিচ্যুতি বা মাস ডিফেক্ট বলে।
◆ ভর বিচ্যুতি = প্রত্যাশিত ভর- প্রকৃত ভর।
বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের ভর ও শক্তির তুল্যতা অনুযায়ী ভর বিচ্যুতি শক্তিতে রূপান্তরিত হয় ।
যদি ভর বিচ্যুতির বা ভর ঘাটতি m হয় তাহলে যে পরিমাণ শক্তি মুক্ত হবে তা E=mc^2 সমীকরণ থেকে পাওয়া যাবে।
 E হলো মুক্ত শক্তি c  হলো শূন্য মাধ্যমে আলোর বেগ ( 3×10^8 m/s^-1)।
উদাহরণ :-হিলিয়াম পরমাণু নিউক্লিয়াসে দুটি প্রোটন এবং দুটি নিউট্রন আছে। হিলিয়াম পরমাণুর নিউক্লিয়াসের ভর= দুটি প্রোটনের ভর+ দুটি নিউট্রনের ভর
= 2×1.00728 amu +2×1.00867 amu = 4.0319 amu
কিন্তু হিলিয়ামের নিউক্লিয়াসের পরীক্ষা ভিত্তিক ভর=4.0015 amu
ভর ত্রুটি( ∆m)= নিউক্লিয়ন এর মোট ভর– নিউক্লিয়াসের ভর =( 4.0319 – 4.0015 ) = 0.0304 amu
এই শক্তি নিউক্লিয়াসের বন্ধন শক্তি রূপে আত্মপ্রকাশ করে।
 এই শক্তির দ্বারা নিউক্লিয়াসের মধ্যে নিউক্লিয়ন গুলি পরস্পরের সঙ্গে আবদ্ধ থাকে বন্ধন শক্তি বৃদ্ধি হলে নিউক্লিয়াস সুস্থিত হয় এবং কম হলে অস্থায়ী হয় ।
●●●●● বন্ধন শক্তি  :- একটি নিউক্লিয়াস এর নিউক্লিয়ন গুলি একসঙ্গে দৃঢ়ভাবে আবদ্ধ হয়ে নিউক্লিয়াস গঠনের সময় যে শক্তি মুক্ত করে তাকে ওই নিউক্লিয়াসের বন্ধন শক্তি বলে।
∆E= ∆mc^2
●● নিউক্লিয়াসের মধ্যে প্রতিটি নিউক্লিয়নের গড় বন্ধন শক্তি 8 MeV এর কাছাকাছি হলে নিউক্লিয়াস স্থায়ী হয়।
Ni62 এর নিউক্লিয়নে বন্ধনশক্তি সর্ব্বোচ্চ। প্রায় 8.8 MeV.
■■■★■■■■

◆ নিউক্লিয় বিভাজন কাকে বলে?
যে প্রক্রিয়ায় একটি তেজস্ক্রিয় পরমানুর ভারী নিউক্লিয়াসকে ( যেমন ইউরেনিয়াম , প্লুটোনিয়াম বা থোরিয়াম ) ধীর গতির নিউট্রন দিয়ে আঘাত করে প্রায় সমান ভরের দুটি নিউক্লিয়াসে ভেঙে ফেলা হয় এবং তার সঙ্গে কিছু সংখ্যক নিউট্রন এবং প্রচুর পরিমাণে শক্তি উৎপন্ন হয় এই প্রক্রিয়াকে নিউক্লিয় বিভাজন বলে।
■■ এক পারমাণবিক ভর (u)= 1.66 ×10^–27 kg
◆◆ 1u ভর শক্তিতে রূপান্তরিত হলে 931 MeV পরিমাণ শক্তি উৎপন্ন হয় ।


















◆◆1kg  ইউরেনিয়ামের বিভাজনে উৎপন্ন শক্তির পরিমাণ 10 হাজার টন কয়লা পুড়িয়ে উৎপন্ন শক্তির সমান হয়।
পারমাণবিক বোমায় অনিয়ন্ত্রিত শৃংখল বিক্রিয়া ঘটানো হয় ।পারমাণবিক বোমা ইউরেনিয়াম 235 বা প্লুটোনিয়াম 239 এর  নিউক্লিয় বিভাজন বিক্রিয়ার উপর ভিত্তি করে পারমাণবিক বোমা তৈরি করা হয় ।এর ধ্বংসাত্মক ক্রিয়া খুব বেশি এক্ষেত্রে এবং অনিয়ন্ত্রিত শৃংখল বিক্রিয়া ঘটানো হয় এর ফলে মুহূর্তের মধ্যে বিপুল শক্তি তৈরি হয় এই শক্তি চারপাশের সবকিছুকে ধ্বংস করে দিতে পারে। 1945 সালের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে 6 আগস্ট জাপানের হিরোশিমা এবং  9ই আগস্ট নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমা ফেলা হয়েছিল । প্রথমটি ইউরেনিয়াম 235 এবং দ্বিতীয় টি প্লুটোনিয়াম 239 এর বিস্ফোরক বিভাজন বিক্রিয়া উপর ভিত্তি করে ঘটেছিল এবং সম্পত্তির ক্ষতি হয়েছিল প্রায় 1 লক্ষ 66 হাজার মানুষের এবং নাগাসাকিতে প্রায় 80 হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল অর্ধেক সংখ্যক মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। পরের কয়েক মাসে পুড়ে যাওয়ার ফলে ,বিকিরণের ফলে ও অন্যান্য কারণে অসুস্থ হয়ে অপুষ্টিজনিত কারণে বহু মানুষের মৃত্যু ঘটে অসামরিক ব্যক্তিদের।
◆◆ নিউক্লিয় চুল্লি :- 
যে যন্ত্রের সাহায্যে নিউক্লিয় বিভাজন সৃষ্টি শৃংখল বিক্রিয়া কে নিয়ন্ত্রন করে প্রয়োজন মতো নির্দিষ্ট হারে ও সুনিশ্চিতভাবে নিউক্লিয় শক্তি পাওয়া যায় তাকে নিউক্লিয় চুল্লি বলে।
শান্তিপূর্ণভাবে মানব কল্যাণে পারমাণবিক শক্তির এর অবদান গুরুত্বপূর্ণ।
 ■ নিউক্লিয় চুল্লির ব্যবহার :- 
১) বিদ্যুৎ শক্তি উৎপাদনে ২) তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ উৎপাদনে ৩) নিউট্রনের উৎপাদনে ৪) বৈজ্ঞানিক গবেষণার কাজে বিভিন্ন পদার্থের উৎপাদনে ব্যবহার করা হয়।
★★★ নিউক্লিয় দুর্ঘটনা :- 
নিউক্লিয় চুল্লি চিকিৎসা ক্ষেত্রে এবং ল্যাবরেটরি তে ব্যবহৃত তেজস্ক্রিয় মৌল থেকে নির্গত তেজস্ক্রিয় কনার পরিবেশে ছড়িয়ে পড়াকে নিউক্লিয় দুর্ঘটনা বলে ।
তেজস্ক্রিয় বিকিরণের ফলে মানব দেহে সাধারনত দুই ধরনের ক্ষতি হয় ।
1 ) প্যাথলজিক্যাল 2) জেনেটিক ।
প্যাথলজিক্যাল ক্ষেত্রে যে অংশে পড়ে সেই অংশের কোশগুলি ধ্বংস হয়ে যায় ফলে লিউকেমিয়া জাতীয় রোগ  বা ক্যান্সার হতে পারে।
 আবার জেনেটিক ক্ষেত্রে জিন আরও মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয় ফলে এই রোগ বংশানুক্রমিক ভাবে চলতে থাকে । 
চেরনোবিল এবং ফুকুশিমা পারমাণবিক দুর্ঘটনা ভয়াবহ পরিণতি লাভ করেছিল।

 কিছু নিউক্লিয় দুর্ঘটনা:-
@ চেরনোবিল দুর্ঘটনা  :- 1986 সালের 26 এপ্রিল ইউক্রেনে অবস্থিত নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্টে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে।
@ ফুকুশিমা দায়ইচি দুর্ঘটনা :- 2011 সালের 11 মার্চ জাপানের ফুকুশিমা 1 নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট এ ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিউক্লিয় সংযোজন 
যে নিউক্লিয় বিক্রিয়া দুই বা তার বেশি হালকা পরমাণুর নিউক্লিয়াস যুক্ত হয়ে ভারী নিউক্লিয়াস গঠন করে এবং তার ফলে বিপুল পরিমাণ শক্তি নির্গত হয় তাকে নিউক্লিয় সংযোজন বলে।
 উদাহরণ :- দুটি নিউক্লিয়াস যুক্ত হয়ে একটি হিলিয়াম গঠন করে এবং এর সঙ্গে একটি নিউট্রন এবং শক্তি উৎপন্ন হয়।
◆◆ অতি উচ্চ আধানযুক্ত নিউক্লিয়াস গুলির মধ্যে সংযোজন বিক্রিয়া ঘটে । নিউক্লিয়াসের সংযোজন ঘটাতে গেলে এর জন্য প্রচুর শক্তির প্রয়োজন হয় অতি উচ্চ উষ্ণতা এবং চাপে নিউক্লিয় সংযোজন ঘটানো হয় প্রায় 10^7 K  উষ্ণতায় নিউক্লিয়াস গুলি যথেষ্ট তাপীয় গতিশক্তি পেয়ে কুলম্বীয় বাধা অতিক্রম করে সংযোজন বিক্রিয়া ঘটায় । তাই নিউক্লিয় সংযোজন বিক্রিয়া কে তাপ নিউক্লিয় বিক্রিয়া বলা হয় ।
★★ হালকা মৌলের কুলম্বীয় বিকর্ষণ বল কম হয় অপেক্ষাকৃত কম উষ্ণতায় সংযোজন ঘটে ।তাই হাইড্রোজেন মৌল নেওয়া হয় । সংযোজন বিক্রিয়ার ভিত্তিতে হাইড্রোজেন বোমার বিস্ফোরণ ঘটে ।এ ক্ষেত্রে উচ্চ উষ্ণতার সৃষ্টি করতে একটি পারমাণবিক বোমা ফাটানো হয় ।নিউক্লিয় সংযোজন বিক্রিয়ার বিভাজন এর তুলনায় অনেক বেশি শক্তির উদ্ভব ঘটে ।
সূর্য এবং অন্যান্য নক্ষত্রে শক্তি উৎপাদন হয় অবিরত নিউক্লিয় সংযোজন বিক্রিয়ার মাধ্যমে ।
★★★4 টি প্রোটন যুক্ত হয়ে একটি হিলিয়াম নিউক্লিয়াস এবং 2টি পজিট্রন এবং 25 MeV  শক্তি উৎপন্ন করে।







Exercise:-
বিভাগ :-ক ( প্রশ্নমান -১)
১) কোন রশ্মির গ্যাস কে আয়নিত করার ক্ষমতা সর্বোচ্চ ?
২) তেজস্ক্রিয়তা আবিষ্কার করেন কে?
৩)  কোন রশ্মির ভেদন ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি ?
৪) তেজস্ক্রিয়তা একটি কি ধরনের ঘটনা ?
৫) শূন্যস্থানে গামা রশ্মির বেগ কত ?
৬) একটি তেজস্ক্রিয় মৌলের উদাহরণ দাও ?
৭) ক্যান্সারের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয় কোন তেজস্ক্রিয় মৌল ?
৮) তেজস্ক্রিয় পদার্থের সক্রিয়তার এস আই একক কি ?
৯) একটি নিস্তড়িত কণার উদাহরণ দাও ?
১০)  আলফা কণার আধান কত ?
১১) একটি ইলেকট্রনের ভর m হলে একটি বিটা কণার ভর কত হবে ? 
১২) কোন জীবাশ্মের বয়স নির্ণয়ে কোন  তেজস্ক্রিয় রশ্মি ব্যবহার করা হয় ?
১৩) সূর্যের শক্তির মূল উৎস কি ?
১৪)  নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টরে শক্তির যে রূপান্তর ঘটে তা কি ?
১৫)  নিউক্লিয় সংযোজন বিক্রিয়া ঘটে কোথায়?
বিভাগ :-খ( প্রশ্নমান -১)
১) পরমাণুর কোন অংশ থেকে তেজস্ক্রিয় রশ্মি নির্গত হয় ?
২) তেজস্ক্রিয়তার  সংজ্ঞা লেখ ?
৩) কুরি এবং বেকারেল এর মধ্যে সম্পর্ক কি ?
৪) তেজস্ক্রিয় রশ্মির মধ্যে কোনটি তড়িৎ চুম্বকীয় তরঙ্গ ?
৫)  আলফা কণা কি দিয়ে গঠিত ?
৬)  নিউক্লিয় বিভাজন বলতে কী বোঝো ?
৭)নিউক্লিয় সংযোজন বলতে কী বোঝো ?
৮)  নিউক্লিয় সংযোজন এর পূর্বে নিউক্লিয় বিভাজন ঘটানো হয় কেন ?
৯) এমন একটি যন্ত্রের নাম করো যেখানে নিয়ন্ত্রিত নিউক্লিয় বিভাজন ঘটিয়ে বিদ্যুৎ শক্তি উৎপন্ন করা হয় ? 
১০) নিউক্লিয় সংযোজন এবং নিউক্লিয় বিভাজন এর মধ্যে কোনটিতে শতকরা বেশি ভর শক্তিতে রূপান্তরিত হয় ?
১১) একটি আলফা কণার ভর কত ?
১২) কোন তেজস্ক্রিয় রশ্মি ধনাত্মক তেজস্ক্রিয় বিকিরণ থাকে ?
বিভাগ :-গ( প্রশ্নমান -২/৩)
১) তেজস্ক্রিয়তার ব্যবহার গুলি উল্লেখ করো ?
২) আলফা রশ্মি ,বিটা রশ্মি এবং গামা রশ্মির মধ্যে তুলনা করো ?
৩)  তেজস্ক্রিয় রশ্মির নির্গমনে কিভাবে নতুন নিউক্লিয়াস সৃষ্টি হয় ব্যাখ্যা করো ?
৪) ভর ত্রুটি কাকে বলে উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়ে দাও ?
৫) নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টর এর ক্রিয়া সংক্ষেপে ব্যাখ্যা করো ?
৬) বিটা কণার নিঃসরণে কিভাবে একটি পরমাণুর পরিবর্তন ঘটে সমীকরণ দাও ?
৭)  সূর্যের শক্তি উৎপাদন প্রক্রিয়া টি ব্যাখ্যা করো ?
৮) নিউক্লিয় শৃংখল বিক্রিয়া কি ? 

মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

নবম শ্রেণী :: ভৌত বিজ্ঞান :: অধ্যায় :-6 :: তাপ

@ তাপ এক প্রকার শক্তি যা গ্রহণে বস্তুর উষ্ণতা বাড়ে এবং যা বর্জন করলে বস্তুর উষ্ণতা কমে। @  অবস্থার পরিবর্তন না ঘটিয়ে যদি শুধু কেবলমাত্র উষ্ণতা  বৃদ্ধি করে তাহলে সেই তাপকে বলা হয় বোধগম্য তাপ। বস্তুর উষ্ণতা বৃদ্ধি থার্মোমিটারের সাহায্যে পরিমাপ করা হয় @ উষ্ণতার পরিবর্তন না ঘটিয়ে শুধু কেবলমাত্র অবস্থার পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজনীয় তাপ হল লীন তাপ। লীন তাপ এর মাত্রীয় সংকেত - L^2T^-2। @ অন্যভাবে লীন তাপ এর সংজ্ঞা দেওয়া যেতে পারে:- নির্দিষ্ট চাপে একক ভরের কোন পদার্থের অবস্থার পরিবর্তনের জন্য যে পরিমান তাপ প্রয়োগ বা নিষ্কাশন করতে হয় সেই পরিমাণ তাপকে ওই পদার্থের সংশ্লিষ্ট অবস্থার পরিবর্তনের লীন তাপ বলে। @ ক্যালরিমিতির মূলনীতি :- ভিন্ন উষ্ণতার একাধিক বস্তুকে  পরস্পরের সংস্পর্শে আনা হলে বস্তু গুলির মধ্যে  তাপের আদান প্রদান ঘটে যদি অন্য কোন ভাবে তাপক্ষয় না হয় তাহলে উষ্ণ বস্তুগুলি দ্বারা বর্জিত তাপ এবং শীতল বস্তুগুলি  দ্বারা গৃহীত তাপ সমান হয় এটাই ক্যালরিমিতির মূলনীতি। @ অর্থাৎ কোন বস্তু দ্বারা গৃহীত তাপ = বস্তুর ভর × বস্তুর আপেক্ষিক তাপ × উষ্ণতার ...

দশম শ্রেণী : জীবন বিজ্ঞান : পপুলেশন

১) পপুলেশন কি? ¶ -  বিশেষ কোন ভৌগলিক অঞ্চলে বসবাসকারী একই প্রজাতিভুক্ত জীব গোষ্ঠী কে বলা হয় পপুলেশন।  অর্থাৎ কোন বিশেষ বাস্তু তন্ত্রের বা বাসস্থানের কোন প্রজাতিভুক্ত সমস্ত জীবের সমাহারই হলো পপুলেশন বা জনসংখ্যা। ২) পপুলেশন এর উল্লেখযোগ্য কয়েকটি বৈশিষ্ট্য গুলি কি কি? ¶ - পপুলেশন এর উল্লেখযোগ্য কয়েকটি বৈশিষ্ট্য হলো :-  ক) পপুলেশন ঘনত্ব বা পপুলেশন ডেন্সিটি  :- কোন ভৌগলিক অঞ্চলের একক ক্ষেত্রে বা একক আয়তনে যে পরিমাণে কোন প্রজাতির জীব বাস করে তাকেই পপুলেশন ঘনত্ব বলে । যেমন :- কোন একটি বনে প্রতি বর্গ কিলোমিটারে যতগুলো হরিণ কিংবা যতগুলো হাতি থাকে প্রতি একর জমিতে যতগুলো আম গাছ থাকে সেই সংখ্যাটি কে পপুলেশন ঘনত্ব হিসেবে ধরা হয়। খ) নেটালিটি বা জন্মহার :- পপুলেশন প্রজাতির সদস্যরা যে হারে সন্তান-সন্ততি জন্ম দেয় তাকে বলে ন্যাটালিটি। অর্থাৎ  একক সময়ে জনন এর মাধ্যমে যে সংখ্যায় নতুন সদস্য পপুলেশনে যুক্ত হয় তাকে ন্যাটালিটি বলে। গ) মর্টালিটি বা  মৃত্যুহার :- একক সময়ে কোন পপুলেশন এ যে সংখ্যায় জীবের মৃত্যু ঘটে তাকে মর্টালিটি বা  মৃত্যুহার বলে। ...

সপ্তম শ্রেণী :- পলিথিন ও পলিমার

@  পলিথিন কি  পলিথিন হলো ইথিলিনের পলিমার ।এটি অত্যন্ত নমনীয় এবং জল রোধক পদার্থ । @ এর ব্যবহার উল্লেখ করো :- এর  ব্যবহার গুলি হল – টেবিলের ঢাকনা ,খেলনা ,সিমেন্টের বস্তা ,বৈদ্যুতিক তারের আচ্ছাদন প্রভৃতি প্রস্তুতিতে ব্যবহার করা হয় । @ পলিমারের শ্রেণীবিভাগ কর এবং এদের ব্যবহার উল্লেখ করো । উৎসের উপর ভিত্তি করে পলিমারকে সাধারণত তিন ভাগে ভাগ করা হয় ১) প্রাকৃতিক পলিমার ২) সংশ্লেষিত বা কৃত্রিম পলিমার ৩) অর্ধ কৃত্রিম বা অর্ধ সংশ্লেষিত পলিমার । @ প্রাকৃতিক পলিমার :- প্রকৃতি থেকে অর্থাৎ প্রাণী এবং উদ্ভিদের দেহ থেকে যে সমস্ত পলিমার পাওয়া যায় তাদের প্রাকৃতিক পলিমার বলে । যেমন – সেলুলোজ, প্রোটিন  ইত্যাদি। @ কৃত্রিম পলিমার :- রসায়নাগারে কৃত্রিমভাবে তৈরি পলিমারকে সংশ্লেষিত বা কৃত্রিম পলিমার বলে। যেমন - পলিইথিলিন, পিভিসি (PVC) ইত্যাদি। @ অর্ধ সংশ্লেষিত বা  অর্ধ কৃত্রিম পলিমার:- প্রাকৃতিক পলিমার এর সঙ্গে অন্য পদার্থের রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটিয়ে কৃত্রিম ভাবে যে পলিমার তৈরি হয় তাকে অর্ধ সংশ্লেষিত বা অর্ধ কৃত্রিম পলিমার বলে ।যেমন :-সেলুলোজ নাইট্রেট প্রা...